জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দীর্ঘদিনের চাপ পেরিয়ে খুলনায় বাধাহীন সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক সক্রিয়তা বেড়েছে বিএনপির। নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিতে দলীয় কর্মীদের সাধারণ মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
গণমাধ্যমের বিভিন্ন খবর ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেশিরভাগ স্থানে অতি উৎসাহী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি রাতারাতি দল পাল্টে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপি যোগ দিচ্ছেন অনেকে। দল পাল্টানো সুবিধাবাদীদের একটি শ্রেণি লুটতরাজেও জড়াচ্ছেন।
গত ১৫ বছর আগে বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে এর অনেক কিছুই দখল করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাল্টা দখলের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগে জানা যায়।
এ দিকে মেয়াদোত্তীর্ণ, দীর্ঘদিন সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে না পারা, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠাসহ বিভিন্ন কারণে খুলনায় গত ১০ আগস্ট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল, ১৭ আগস্ট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল এবং ১৯ আগস্ট জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি এবং সবশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতারা ঝুলিয়ে বিএনপি ঘরানার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দোকান ভাঙচুর, লুটপাট করে।
এদিকে বেপরোয়া হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের লাগাম টানতে রাজনৈতিক দলের কঠোর হওয়ার পাশাপাশি দ্রুত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালযয়ের সমাজ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক তানভীর আহমেদ সোহেল।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রাখতে গিয়ে আইন থাকা যতো জরুরি, এর প্রতিপালনও জরুরি। এই নতুন পরিস্থিতিতে সময় নিলেও যতো দ্রুত সম্ভব আমার মনে হয় ব্যক্তি বা কমিটি পর্যায় থেকে সবাইকে ভূমিকা নিতে হবে। রাজনৈতিক দলকেও সক্রিয় থাকতে হবে।’
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘জিরো টলারেন্সে কোনো অবস্থায় আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিষ্কার ম্যাসেজ, বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে কোনো কাজ বিএনপি নেতাকর্মীদের করতে দেয়া যাবে না। দলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযোগ আমলে নিয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়ে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহমদ বলেন, ‘যেসব অভিযোগ আমরা পেয়েছি সবগুলোকেই আমলে নেয়া হয়েছে। যৌথ বাহিনীর সঙ্গে আমরা অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার ছাড়াও অন্যান্য দাগি সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি।’
খুলনার একাধিক এলাকায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় আহত অর্ধশত নেতাকর্মী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।